মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ ও মোয়াজ্জেম হোসেন: লালমনিরহাটে বৃহস্পতিবার সকালে নিজের জানমাল রক্ষায় এস. তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না নামে এক কলেজ শিক্ষিকা প্রতিবেশি একটি প্রভাবশালী পরিবারের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এস. তাবাসসুম রায়হান মূসতাযীর তামান্না দাবী করে বলেন, ‘সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত খলিলুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড প্রমাণ করার চেষ্টা করছে প্রতিবেশি প্রভাবশালী মহলটি। তারা আমাকে গ্রেফতারের দাবী করে মহাসড়কে লাশ রেখে সড়ক অবরোধ করেছে। আমার বিরুদ্ধে মামলা নিতে ওই পরিবারটি বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই পেতে এবং জানমাল রক্ষায় সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে পঠিত কাগজ মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এস. তাবাসসুম রায়হান মূসতাযীর তামান্না লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম এলাকার মৃত. বজলে রহমান মূসতাযীরের (সাবেক প্রধান শিক্ষক) একমাত্র সন্তান ও তিনি কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত। তামান্নার বৃদ্ধা মা আমেনা শিরিন ছাড়া ওই পরিবারের আর কেউ নেই। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত দুই একর তেত্রিশ শতাংশ জায়গার একটি বিরাট ভিটায় বসবাস করে আসছেন তারা। এ বসতবাড়ীর ভিটার দক্ষিণে ও পূর্বে প্রতিবেশি প্রভাবশালী পরিবারটি বসবাস করে। এরমধ্যে দক্ষিণ দিকে প্রভাবশালী প্রতিবেশির লোকজনকে দিয়ে সীমানা প্রাচীর ভাঙা এবং বিনা উস্কানিতে গৃহপরিচারিচা রোখসানা বেগমকে লাঞ্ছিত ও তার শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ কারণে খলিলুর রহমান, তার স্ত্রী মরিয়ম আক্তার পেয়ারি, ডাবলু মিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ১০ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন তামান্না। খলিলুর রহমান সহ ওই মামলার অপর আসামীরা গত ২২ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার পথে আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া এলাকায় দুই ইজিবাইকের সংঘর্ষে খলিলুর রহমান ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ইজিবাইকে থাকা স্ত্রীসহ অপর আসামীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ২৬ অক্টোবর খলিলুর রহমান রংপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তামান্না আরো বলেন, ‘সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী প্রতিবেশি প্রভাবশালী পরিবার আমার এবং বৃদ্ধা মায়ের সরলতা ও লোকবলের অভাবের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। ধানি জমির ভেতর দিয়ে রাস্তা করতে চাচ্ছে। নানা কারণে জমি বিক্রি করতে চাপ দিচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমাকে ও মাকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সরকার প্রধানের নিকট এর প্রতিকার চাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন আমাদের করণীয় কি? এখন কি আমি ও আমার বৃদ্ধা মা আত্ম হনন করবো না কি প্রতিপক্ষের দ্বারা যে কোনো সময় প্রাণ নাশের মতো পরিস্থিতির শিকার হব? স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশে কি নিরাপদে মান সম্পান নিয়ে বেচে থাকার আমাদের কোনো অধিকার নেই? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে এই কি আমাদের নিয়তি?’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তামান্নার মা আমেনা শিরিন বলেন, ‘যাঁরা মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের জায়গাজমি দখল করার পায়তারা করছে। আমাকে ও মেয়েকে একা পেয়ে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একজন মা। আমিও একজন মা হিসেবে তাঁর নিকট বিচার চাই।’